চুকনগর গণহত্যা (২০ মে ১৯৭১): 💀 ৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত।

🟥 চুকনগর গণহত্যা (২০ মে ১৯৭১):
পৃথিবীর ইতিহাসে একদিনে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ দলিল!
📍 অবস্থান: চুকনগর বাজার ও পাতখোলা বিল, ডুমুরিয়া উপজেলা, খুলনা
📅 তারিখ: ২০ মে, ১৯৭১
🕚 সময়: সকাল ১১টা – বিকেল ৩টা
☠️ হত্যাকৃত মানুষ: আনুমানিক ১০,০০০ থেকে ১২,০০০+
👥 ভুক্তভোগীরা: খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, কেশবপুরসহ আশেপাশের অঞ্চলের নিরীহ, নিরস্ত্র নারী-পুরুষ-শিশু
________________________________________
🔻 গণহত্যার পটভূমি:
১৯৭১ সালে মে মাসের শুরু থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নৃশংস অভিযান শুরু করে। হাজার হাজার পরিবার প্রাণ বাঁচাতে ভারতের দিকে পালিয়ে যেতে থাকে।
এইসব উদ্বাস্তু মানুষদের এক বড় অংশ জমায়েত হয় চুকনগরের ভদ্রা নদীর তীরে, যা ছিল সীমান্তঘেঁষা ভারতের দিকে যাবার একটি ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’।

🔻কিন্তু ভাগ্য ছিল নির্মম!
১৯৭১ সালের ২০ মে সকাল ১১টার দিকে, সাতক্ষীরা থেকে আসা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২টি দল (ট্রাক ও জিপে) চুকনগর ও পাতখোলা বিলে ঢুকে গুলি চালানো শুরু করে।
তারা গুলি চালাতে চালাতে চুকনগর বাজারের ভেতর পর্যন্ত ঢুকে পড়ে এবং নির্বিচারে নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ— কাউকে ছাড়েনি।
________________________________________


❗ হত্যাযজ্ঞের প্রকৃতি:
🧨 অস্ত্র ব্যবহৃত হয়:
• LMG (Light Machine Gun)
• SLR (Self Loading Rifle)
• SMG (Submachine Gun)
• ব্রেন গান এবং হ্যান্ড গ্রেনেড

💀 ৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত।

🩸 লাশ পড়ে থাকে চুকনগরের পাতখোলা বিলে, ভদ্রা নদীর পাড়ে, কাদায়, বাঁশঝাড়ে।

🛶 অনেক লাশ নদীতে ভেসে যায়; কুকুর, শকুনে খেয়ে ফেলে— দাফন হয়নি অধিকাংশ শহীদের।

🟥 ভদ্রা নদীর পানি সেদিন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল।

________________________________________
👁️ প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা:
• 🗣️ নিতাই গাইন (প্রত্যক্ষদর্শী):
“১০ হাজারের উপরে লোক মারা গেছে। গুলি করে তাদেরকে বিলে ফেলে দেয়।”
• 🗣️ এরশাদ আলী মোড়ল:
“গুলির শব্দে চারদিক কেঁপে উঠেছিল, মানুষজন ঘর ছেড়ে পালায়, কেউ বাঁচেনি।”
________________________________________
📚 গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধাদের অভিমত:
• 🧠 হিলাল ফয়েজী (প্রধান সমন্বয়ক, আমরা একাত্তর):
“৩–৪ ঘণ্টায় পৃথিবীর ইতিহাসে এতো বিশাল সংখ্যক মানুষ হত্যার অন্য উদাহরণ নেই।”
• 🧠 অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম (সভাপতি, চুকনগর গণহত্যা ’৭১ স্মৃতি রক্ষা পরিষদ):
“যুদ্ধাপরাধের সব প্রমাণ— হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ— এখানে ঘটেছে। এটা আন্তর্জাতিকভাবে জেনোসাইড ঘোষণা হওয়া উচিত।”

🔗 চুকনগর কেবল একটি নাম নয় – এটি একটি রক্তাক্ত ইতিহাস। এটি জাতিগত নিধনের ভয়াবহ দলিল, যা নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং স্মরণে রাখতে হবে।
 

3 comments

Leave a Reply